সুপার কাপের ভবিষৎ নিয়ে বড় বার্তা মার্কুয়েজের!

২০২৫ সালের সুপার কাপের (Super Cup 2025) ফাইনালে জামশেদপুর এফসিকে (Jamshedpur FC) ৩-০ গোলে হারিয়ে এফসি গোয়া (FC Goa) নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছে, যা তাদেরকে সুপার কাপ ইতিহাসে প্রথম দ্বৈত বিজয়ী ক্লাবে পরিণত করেছে। এই জয়ের ফলে তারা এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু (ACL2) ২০২৫–২৬ মরসুমে যোগ্যতা অর্জনের করার সুযোগ পেয়েছে। একইসঙ্গে গোয়া এবং ভারতীয় ফুটবলের (Indian Football Team) কোচ মানোলো মার্কুয়েজ (Manolo Marquez) এফসি গোয়া অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটালেন সোনালী সফলতার মধ্য দিয়ে।

ফাইনালের আবহ ও প্রতীকী ঝড়

জামশেদপুরের বিরুদ্ধে গোয়ার তৃতীয় গোলের পরেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড় নামে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গা স্টেডিয়ামে। অনেকের কাছে এটি যেন এক প্রতীকী উদযাপন ছিল এফসি গোয়ার পুনরুত্থানের।

সুপার কাপের পরিচয় সংকট

টুর্নামেন্টটি এখনও নিজের ভূমিকা ঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি। আইএসএলের পরে হঠাৎ শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের কোনও নির্দিষ্ট ছন্দ ছিল না, দর্শকও কম। পরিকল্পিতভাবে সিজনের মধ্যে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা বাতিল করা হয় সময় সংকটের কারণে। ১৪ দিনে ১৩টি ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা, তার মধ্যে দুপুরে ম্যাচ – দর্শক আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ। খেলোয়াড়দের ক্লান্তি ও চোট ছিল প্রধান সমস্যা।

একক ভেন্যু ও কম আকর্ষণ

পুরো টুর্নামেন্ট একটি মাত্র ভেন্যুতে আয়োজন করায় ছোট দলগুলোর নিজস্ব মাঠে খেলার ও দর্শক টানার সুযোগ হারিয়ে যায়। এতে করে গোকুলাম কেরালা এবং ইন্টার কাশীর মত ক্লাবগুলোর কাহিনি বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ল না।

বিদেশি নির্ভরতা ও অসম প্রতিযোগিতা

সুপার কাপে ছয়জন বিদেশি খেলোয়াড় মাঠে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়, যেখানে আইএসএলে চারজন। ফলে শক্তিশালী স্কোয়াড গড়তে সক্ষম ক্লাবগুলিই এগিয়ে যায় — যেমন এফসি গোয়া ও জামশেদপুর।

মোহন বাগানের ‘রিজার্ভ স্কোয়াড’ পরীক্ষামূলক অংশগ্রহণ

আইএসএল শিল্ড এবং কাপ জেতা মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট সুপার কাপে প্রায় পুরোপুরি তরুণ ও রিজার্ভ দল পাঠায়। সেমিফাইনালে গোয়ার কাছে হার তাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতির প্রমাণ দেয়।

ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য মঞ্চ হিসেবে গড়ার সম্ভাবনা

কোচ মার্কুয়েজ নিজেই বলেন, “আমি চাই সুপার কাপ হোক শুধুমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য। এতে তাদের উন্নতির সুযোগ থাকবে।” ভবিষ্যতের জন্য এটাই হতে পারে টুর্নামেন্টের আসল চেহারা।

বিশ্রামহীন সূচি ও ক্লান্ত প্রতিযোগিতা

অধিকাংশ ক্লাবের কাছে এই টুর্নামেন্ট যেন কেবল একটা দায়। ইচ্ছার চেয়ে বেশি ক্লান্তি নিয়ে এসেছে এটি। এভাবে একটি কাপ টুর্নামেন্ট নয়, বরং একরকম চাপে ঠেলে দেওয়া টুর্নামেন্টে পরিণত হয়েছে সুপার কাপ।

ভবিষ্যত অনিশ্চিত

এখনও সর্ব ভারতীয় ফুটবল সংস্থা আইলিগের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ডিভিশনে খেলা (I-League 2, 3) ক্লাবদের যুক্ত করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। কারণ অর্থনৈতিক ফারাক ও প্রতিযোগিতার মান। ফলে টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ এখনও অজানা।

গৌরবের মাঝে প্রশ্নচিহ্ন

এফসি গোয়ার জন্য সুপার কাপ ছিল এক মুক্তির রাস্তা। কিন্তু পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে থাকা ক্লান্তি, অনুপ্রেরণার অভাব, আর কাঠামোগত জটিলতা প্রশ্ন তুলে দেয় — সুপার কাপ আদৌ ভারতীয় ফুটবলের জন্য কী ধরনের মূল্য রাখে?

  • Related Posts

    অধিনায়কত্ব হারানোর ভয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অবসর রোহিতের? জানুন আসল কারণ

    ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma ) টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেছেন। এটি ভারতের ইংল্যান্ড সফরের মাত্র এক মাস আগে এসেছে। এই…

    SAFF U19 চ্যাম্পিয়নশিপে ঝড় তুলতে পারেন ব্লু কোল্টসের পাঁচ তারকা

    ৯ মে থেকে শুরু হচ্ছে SAFF U19 চ্যাম্পিয়নশিপ। সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে অরুণাচল প্রদেশের ইউপিয়ার গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে। ভারত এই প্রতিযোগিতার আয়োজক এবং ছয়টি দলের…