
আইএসএলের মরসুমটা একেবারেই ভালো যায়নি। লিগ টেবিলে দশ নম্বরে শেষ করেছে লাল-হলুদ বাহিনী। এরই মধ্যে এক গোলে পিছিয়ে বুধবার এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে (AFC Challenge League Quarter Final) আর্কাদাগের (FK Arkadag) বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলতে নেমেছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। এই ম্যাচে নামার আগে থেকেই দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কোচ ব্রুজো। তাই মশলা ব্রিগেডের জন্য এটি এক বড় মুহূর্ত।
এই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য এক আশ্চর্যজনক মুহূর্তের সূচনা হয়। প্রথম মিনিটেই লাল-হলুদ শিবিরের হয়ে গোল করেন মেসি বৌলি। খেলার শুরুতেই তিনি এক লম্বা ফ্রি-কিকে বল দেয় এবং এটি বৌলির মাথায় লেগে দিয়ামান্তাকসের পায়ে চলে আসে। তারপর দিয়ামান্তাকসের নেওয়া শট আর্কাদাগের গোলকিপারের হাত থেকে প্রতিহত হয়ে সহজেই বৌলি গোলটি করে দেন। ১-০ তে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
Keep going, polas!
#JoyEastBengal #ChallengeLeague #EBFCInAsia pic.twitter.com/MKLl5dX6V3
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) March 12, 2025
ম্যাচের শুরুতে আর্কাদাগ নিজেদের বল দখলে রেখে কিছু ভালো সুযোগ তৈরি করতে চেষ্টা করে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল তাদের রক্ষণের দৃঢ়তার মাধ্যমে বেশ কিছু আক্রমণ নস্যাৎ করে দেয়। ম্যাচে প্রথম হঠাৎ বিপত্তি ঘটে যখন ইস্টবেঙ্গলের মাহেশ ফের একবার ফাউলের শিকার হন, তবে রেফারি কোনও কার্ড প্রদানের পরিবর্তে শুধু থ্রো ইন দেন। এদিকে হেক্টররা রক্ষণভাগে নিজেদের সেভাবে প্রতিরোধ করে রেখেছে।
১২ মিনিটে আর্কাদাগ তাদের প্রথম কর্নার পায়, তবে সেটি কোনও ফলপ্রসূ আক্রমণে পরিণত হয়নি। যদিও আর্কাদাগ আক্রমণে কিছুটা আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে, কিন্তু ইস্টবেঙ্গল প্রতিরক্ষায় কঠিন হয়ে ওঠে এবং আর্কাদাগ এক শক্তিশালী শট মিস করে। এক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক গিলও কিছু দারুণ সেভ করেন।
খেলার মধ্যে ইস্টবেঙ্গল কিছু আক্রমণ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তবে একাধিক শট আটকে যায় এবং গোল পায় না। ১৮ মিনিটের সময়ে দিয়ামান্তাকস দারুণ শট নেন, যা পোস্টে লাগে এবং তারপর সেলিস সেই বলের দিকে চলে, কিন্তু সেলিসের শট গোলপোস্টের বাইরে চলে যায়। তবে, একটি সম্ভাব্য গোল থেকে সেলিস এবং দিয়ামান্তাকস দুটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল। যদি কার্যকরী হত, তবে ইস্টবেঙ্গল এই সময়ে ম্যাচের ফলাফল আরও ভালো করতে পারত।
ম্যাচের ৩০ মিনিটে আর্কাদাগ একটি পরিবর্তন আনে এবং ইস্টবেঙ্গলও নিজের পদ্ধতি পরিবর্তন করে। সমর্থকদের আশা রাখে যে তারা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবে। তবে ৩৩ মিনিটে, ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডার লালচুঙনুঙ্গাকে এক কড়া সিদ্ধান্তের কারণে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানো হয় এবং তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। এটি ইস্টবেঙ্গলের জন্য এক বড় ধাক্কা ছিল, কারণ তারা এখন ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল।
এটি তাদের আক্রমণের পরিকল্পনায় কিছুটা বাধা সৃষ্টি করে এবং আর্কাদাগ আরও আক্রমণাত্মক হতে থাকে। তবে, ইস্টবেঙ্গল তাদের রক্ষণের পজিশন আরও শক্তিশালী করে এবং অতিরিক্ত কোণের সুযোগগুলিও প্রতিহত করে। ৪১ মিনিটের সময় আর্কাদাগের ডুরদিয়েভ প্রথম হলুদ কার্ড পান এবং সেইসঙ্গে ম্যাচটি উত্তপ্ত হতে থাকে।
ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল বেশ কিছু শট তৈরি করে, তবে কোনটাই গোলের দিকে যাচ্ছিল না। খেলায় ৪৫ মিনিটের পর চার মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করা হয়, যার মধ্যে আরও কিছু ফাউল ও রেফারি আলোচনা হয়।
প্রথম লেগের ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল ১-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়। তাদের সামনে এখন ২ গোলের ব্যবধানে জিততে হবে পরবর্তী রাউন্ডে পৌঁছাতে হলে। তবে, মাঠের বাইরে ইস্ট বেঙ্গল নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, যা তাদের যাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। এটি তাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং সময় হলেও, তাদের ইতিহাস এবং দলের মানদণ্ড দেখে আশা করা যায় তারা দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের উত্তরণের চেষ্টা করবে।