
আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) পারফরম্যান্স ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রবিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় বলেই রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। এমন সময় যখন দল ২১৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করছে, পন্থের এই ধরনের শট নির্বাচনের যৌক্তিকতা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছে ক্রিকেটমহল। খেলার পর ডাগআউটে তাঁর নিঃসঙ্গ বসে থাকা দৃশ্য এবং সতীর্থদের তরফে তেমন সহানুভূতির অভাব যেন এই প্রশ্ন আরও জোরালো করেছে— দলে কি পন্থ ক্রমশ একা হয়ে পড়ছেন?
পন্থের এই ইনিংস ছিল পুরোপুরি হতাশাজনক। উইল জ্যাকসের প্রথম বলেই কাট করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে চার পান, যা ভাগ্যের জোরে বেঁচে যাওয়ার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু পরের বলেই রিভার্স সুইপ মারতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন। হার্দিক পান্ডিয়া ঠিক এই পরিকল্পনাতেই ফিল্ডিং সাজিয়েছিলেন। অথচ বারবার একই ভুল করেও শোধরানোর নাম নেই পন্থের। রাজস্থান ম্যাচেও একই ভুল করেছিলেন তিনি। তাহলে প্রশ্ন উঠেই যায়— কেন বারবার নিজের দলকে বিপদে ফেলছেন?
বর্তমানে আইপিএলে ১০ ইনিংসে পন্থের সংগ্রহ মাত্র ১১২ রান। ইনিংসগুলোর পরিসংখ্যানে (০, ১৫, ২, ২, ২১, ৬৩, ২, ৩, ০, ৪) বোঝা যায়, একমাত্র চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাদ দিলে বাকি ম্যাচগুলোয় তিনি কার্যত ব্যর্থ। একজন অধিনায়ক ও প্রথম সারির ব্যাটার হিসেবে এরকম পারফরম্যান্স কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে যখন তাঁর কাঁধে ২৭ কোটি টাকার বোঝা রয়েছে এবং বিশ্বকাপ দলে ফেরার স্বপ্ন রয়েছে, তখন দায়িত্বহীন ব্যাটিং দল ও নিজের স্বপ্ন দুই-ই ভাঙার পথ।
ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, আউট হয়ে ফেরার পর মুখে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে পন্থ যখন ডাগআউটে বসে ছিলেন। তখন পাশে বসে থাকা কেউ তাঁকে সান্ত্বনা দেননি। শুধু জাহির খান একবার তাঁর হাঁটুতে হাত রেখেছিলেন। কিছুক্ষণ পর বিজয় দাহিয়ার সঙ্গে হেসে কথা বললেও, সেটা যেন ছিল জোর করে হাসা। এই পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয়, পন্থের প্রতি দলের ভরসা কি ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যাচ্ছে?
কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও অতটা মসৃণ নয় বলেই শোনা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সফরে পন্থের অগোছালো ব্যাটিং নাকি গম্ভীরকে বিরক্ত করেছিল। পরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর পন্থের নাম নিলেও, গম্ভীর জানিয়ে দেন রাহুলই উইকেটরক্ষক হবেন। স্পষ্টতই, বারবার ভুল করে চলা একজন খেলোয়াড়ের প্রতি গম্ভীরের ধৈর্য কমছে।
তবে সব দিক খতিয়ে দেখলে, এটাই পন্থের জন্য শেষ সুযোগ। নিজের খেলা শুধরে না নিলে, জাতীয় দলের দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে। প্রতিভা থাকলেই হয় না, প্রয়োজন পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার বুদ্ধি ও দায়িত্ববোধ। আর সেটা না এলে যত টাকাই পেছনে থাকুক না কেন, মাঠে প্রতিফলন না ঘটলে, সমালোচনা হবেই।
অন্যদিকে, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কিন্তু ফের ছন্দে। সূর্যকুমার যাদব ও রিকেলটনের দুর্দান্ত ব্যাটিং এবং বুমরাহর বিধ্বংসী বোলিংয়ের জোরে পাঁচ ম্যাচে টানা জিতেছে তারা। এখন দেখার, এই ছন্দ ধরে রেখে তারা প্লে-অফে পৌঁছতে পারে কি না।