
পঞ্জাব এফসি (Punjab FC) গোয়ার রাইয়ায় অনুষ্ঠিত ড্রিম স্পোর্টস ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ (Dream Sports National Championship) ফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে (Mohun Bagan SG) ২-০ গোলে পরাজিত করে অনূর্ধ্ব -১৭ শিরোপা ধরে রাখল। শুভম গুরুং এবং আশিস লোহারের করা গোল নিশ্চিত করল যে পঞ্জাবের তরুণ শেররা এক দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে, আঞ্চলিক কোয়ালিফায়ার থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত, পঞ্জাব অপরাজিত থেকে শিরোপা ঘরে তুলেছে।
ম্যাচের শুরু থেকেই পঞ্জাব এফসি মোহনবাগানের গোলপোস্টে আক্রমণ শুরু করে এবং পুরো ম্যাচে চাপ অব্যাহত রাখে। ১০ম মিনিটে শুভম গুরুং রিশিকান্ত সিংয়ের একটি নিখুঁত লো ক্রস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয় গোল আসে ৬৪তম মিনিটে, যখন আশিস লোহার বাঁ দিকের উইং দিয়ে দুর্দান্ত দৌড়ের পর শক্তিশালী শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন। পাঞ্জাবের তরুণ শেররা ম্যাচে স্পষ্টভাবে আধিপত্য বিস্তার করে, মোট ২১টি শট নেয়, যার মধ্যে ১৪টি ছিল লক্ষ্যে। মোহনবাগানের গোলরক্ষক নন্দন রায়ের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং ডিফেন্ডারদের শেষ মুহূর্তের ব্লক না থাকলে স্কোরলাইন আরও বড় হতে পারত।
টুর্নামেন্টে পাঁচটি গোল করা বিশাল যাদব প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হন, আর ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে নেন শুভম গুরুং। রমেশ গঙ্গারাম বিস্তার কোচিংয়ে পাঞ্জাব এফসি গ্রুপ বি-তে তাদের সব ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছায়। তারা ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ দল নরউইচ সিটি এফসিকে ২-১ গোলে এবং সেসা ফুটবল অ্যাকাডেমি ও ফুটবল ফর চেঞ্জ, মণিপুরের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে আরামদায়ক জয় ছিনিয়ে নেয়।
ম্যাচের শুরু থেকেই পাঞ্জাবের আক্রমণাত্মক কৌশল স্পষ্ট ছিল। তারা মোহনবাগানের ডিফেন্সকে ক্রমাগত চাপে রেখে একের পর এক সুযোগ তৈরি করে। শুভম গুরুংয়ের গোল ম্যাচের গতি নির্ধারণ করে এবং আশিস লোহারের দ্বিতীয় গোল পাঞ্জাবের আধিপত্যকে আরও শক্তিশালী করে। পাঞ্জাবের খেলোয়াড়রা দলগতভাবে দুর্দান্ত সমন্বয় দেখায়, যেখানে মিডফিল্ড এবং ফরোয়ার্ড লাইনের মধ্যে নিখুঁত সংযোগ ছিল। বিশাল যাদব, রিশিকান্ত সিং এবং অন্যান্য খেলোয়াড়দের ক্রমাগত চাপ মোহনবাগানের ডিফেন্সকে ভেঙে পড়তে বাধ্য করে।
মোহনবাগান, যারা আঞ্চলিক যোগ্যতা অর্জন পর্বে কলকাতায় মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল, এই ম্যাচে তাদের স্বাভাবিক ছন্দ খুঁজে পায়নি। তাদের আক্রমণ ভোঁতা ছিল এবং পাঞ্জাবের ডিফেন্সের সামনে তারা কার্যকর সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। নন্দন রায়ের গোলকিপিং এবং ডিফেন্ডারদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, মোহনবাগান পাঞ্জাবের আক্রমণের ধারাবাহিকতা রুখতে পারেনি।
পাঞ্জাব এফসির এই জয় তাদের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের প্রতিভা এবং কোচিং স্টাফের কৌশলগত প্রস্তুতির প্রমাণ। রমেশ গঙ্গারাম বিস্তার নেতৃত্বে দলটি শৃঙ্খলা, আক্রমণাত্মক ফুটবল এবং ডিফেন্সিভ দৃঢ়তার একটি নিখুঁত মিশ্রণ দেখিয়েছে। বিশাল যাদবের গোলস্কোরিং দক্ষতা এবং শুভম গুরুংয়ের ফাইনালে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দলের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল।
এই জয়ের মাধ্যমে পাঞ্জাব এফসি ভারতীয় ফুটবলের তরুণ প্রতিভাদের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্দেশ করেছে। তাদের অপরাজিত রেকর্ড এবং টুর্নামেন্ট জুড়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাদের দৃঢ়তা এবং প্রতিভার প্রমাণ। ভক্তরা এখন অপেক্ষায় রয়েছেন, এই তরুণ শেররা ভবিষ্যতে কীভাবে ভারতীয় ফুটবলের মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।