
সুপার কাপে (Super Cup 2025) চার্চিল ব্রাদার্স নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায়, প্রথম ম্যাচ না খেলেই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে মোহনবাগান (Mohun Bagan)। শনিবার তারা মুখোমুখি হবে কেরালা ব্লাস্টার্সের (Kerala Blasters), যাদের বিরুদ্ধে খেলাটা সহজ হবে না—তা ভালোভাবেই জানে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এই ম্যাচ ঘিরে প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখতে নারাজ কোচ বাস্তব রায়। ফুটবলারদের মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত রাখতে তৈরি তিনি।
কেরালা ব্লাস্টার্স ইতিমধ্যে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। সেই ম্যাচে নোয়া সাদাউয়ের দুরন্ত পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে মোহনবাগান থিঙ্কট্যাঙ্কের। উইং থেকে গতিময় এবং দিক পরিবর্তন করে আক্রমণের ধরণে বারবার বিপদ তৈরি করেছিলেন তিনি। তাই মোহনবাগান শিবিরে এখন সবচেয়ে বড় চিন্তা—নোয়াকে কীভাবে রোখা যায়। মিডফিল্ডে দীপক টাংরি এবং রক্ষণে গ্লেন মার্টিনকে দিয়ে তাঁকে আটকানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
দলে রয়েছেন সাহাল আব্দুল সামাদ, আশিক কুরুনিয়ান এবং দীপক টাংরির মতো অভিজ্ঞ ভারতীয় ফুটবলাররা। বিদেশি কোটায় একমাত্র রয়েছেন নুনো রেইজ। তবে সুপার কাপে দল অনেকটাই নির্ভর করছে ডেভেলপমেন্ট লিগের তরুণ ফুটবলারদের উপর। এই তরুণ ব্রিগেডকে ঘিরেই রণকৌশল সাজাচ্ছেন বাস্তব রায়। অনুশীলনে দেখা গিয়েছে, রক্ষণ ও উইং প্লে’র উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। সাইড লাইনে থেকে আশিক কুরুনিয়ানের গতি এবং স্কিল ব্যবহার করে আক্রমণে ওঠার পরিকল্পনা রয়েছে।
রবিবার ইস্টবেঙ্গল বনাম কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচটিকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন মোহনবাগান কোচ ও সহকারী স্টাফরা। তারা বুঝতে পেরেছেন, কেরালা দলটি দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাক করে এবং মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠে। এর মোকাবিলায় ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এবং দুই সেন্টার ব্যাকের দায়িত্ব অনেকটাই বেড়েছে। গ্লেন মার্টিন চোট সারিয়ে দলের সঙ্গে অনুশীলনে ফিরে এসেছেন, ফলে তাঁর খেলার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়েছে। তবে কোচ বাস্তব রায় কোনওরকম তাড়াহুড়ো করতে নারাজ। তিনি ধীরে সুস্থে গ্লেনের ফিটনেস বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিন অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন ডেভেলপমেন্ট লিগের কোচ ডেগি কার্ডোজো। তিনি তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে আলাদা করে ড্রিল করান। যুব ফুটবলারদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে বাড়তি উন্মাদনা। কারণ, কেরলের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রমাণ করার এটিই হতে পারে বড় সুযোগ।
সব মিলিয়ে, মোহনবাগান শিবিরে এখন যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি। সিনিয়র ও জুনিয়রদের মিশেলে একটি ব্যালান্সড দল নামানোর লক্ষ্যেই এগোচ্ছে সবুজ-মেরুন কোচিং স্টাফ। শনিবারের ম্যাচে একদিকে যেমন থাকবে তারুণ্যের উন্মাদনা, অন্যদিকে অভিজ্ঞতার নির্ভরতা। ফুটবলপ্রেমীরা এখন অপেক্ষায়, কখন মাঠে গড়াবে মোহনবাগান বনাম কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচ, আর দেখা যাবে কে হাসবে শেষ হাসি।