
কলকাতায় (Kolkata) অনুষ্ঠিত টাটা স্টিল ট্রেইলব্লেজার্স (Tata Steel Trailblazers) স্পোর্টস কনক্লেভের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে আলোচনার বিষয় ছিল ভারতের প্যারালিম্পিক বিপ্লব (India Paralympic Revolution)। উপস্থিত ছিলেন প্যারালিম্পিক তারকা যোগেশ কাঠুনিয়া (Yogesh Kathuniya), নবদীপ সিং (Navdeep Singh), প্রাক্তন ভারতীয় হকি খেলোয়াড় ( Former India Hockey Player) বিরেন রাসকিনহা (Viren Rasquinha)। ২০২৪ প্যারিস প্যারালিম্পিকে (Paris Paralympics 2024) ভারতের ২৯ পদক জয় প্রসঙ্গে এবং ভারতীয় ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্যারালিম্পিক বা প্যারা স্পোর্টসের উন্নতির বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
সবার মধ্যে একমত ছিল যে, প্যারালিম্পিক বা প্যারা স্পোর্টসের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। প্যানেলিস্টরা উল্লেখ করেন, যেখানে সাধারণত মানুষের চোখে কেবল শারীরিকভাবে সক্ষম অ্যাথলেটদেরই গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে প্যারালিম্পিক অ্যাথলেটদের কৃতিত্বও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সবার জন্য ক্রীড়া হল ইনক্লুসিভিটি এবং প্যারালিম্পিক অ্যাথলেটদের অর্জন তাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যোগেশ কাঠুনিয়া, যিনি ডিসকাস থ্রোয়িংয়ে পারদর্শী, তিনি বলেন, “অবশ্যই সচেতনতা বাড়ছে। ফেডারেশনের তরফ থেকেও অনেক কিছু উন্নত হচ্ছে। ভারতের প্যারা ইভেন্টগুলোর উন্নতি খুবই ভাল হয়েছে। গত কয়েক বছরে এবং এখনকার মধ্যে এক বড় পার্থক্য দেখছি। আরও ভালো হতে পারত, কিন্তু যা আছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।”
অন্যদিকে, প্যারালিম্পিকের জ্যাভেলিন থ্রোয়ে স্বর্নপদকজয়ী নবদীপ সিং বলককককপ্রলেন, “যখন আপনি ইচ্ছাশক্তি দেখান, তখন পরিবর্তন আসে। আর এখন আমরা দেখছি যে সেই পরিবর্তন হচ্ছে। এটি আমাদের, প্যারালিম্পিক অ্যাথলেটদের উসাহ দেয় এবং দেশের জন্যও এটি প্রেরণাদায়ক। সমগ্র ভারতবাসীর জন্য এক উজ্জ্বল অনুভূতি।”
ভারতের প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় এবং ক্রীড়া উন্নয়নে বহুদিন ধরে জড়িত বিরেন রাসকিনহা প্যারালিম্পিক গেমসের সাম্প্রতিক গতি নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে প্যারালিম্পিক গেমসে আগ্রহ এবং বিনিয়োগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ প্যারালিম্পিকে যেখানে ভারত চারটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিল, সেখানে ২০২৪ সালে তা বেড়ে ১২ হয়েছে। এটি এক বিশাল সাফল্য। এর সঙ্গে সঙ্গে পদকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি তরুণদের জন্য এক বড় বিশ্বাসের উৎস, যারা ভাবতে শুরু করেছে তারা সফল হতে পারে।”
ডঃ আমেয়া কাগালি, যিনি প্যারিস প্যারালিম্পিকে ভারতীয় দলের প্রধান চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বলেন, “প্যারালিম্পিক অ্যাথলেটদের এক আলাদা ধরনের চিন্তাভাবনা থাকে। তারা তাদের শরীরকে অন্যভাবে বুঝে। তাদের জন্য কাজ করা আমার পেশাগত দৃষ্টিকোণ থেকে খুব কঠিন কিছু নয়। পুনরুদ্ধার এবং সচেতনতার ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। এই অ্যাথলেটরা যা করেন, তা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করেন।”
এই আলোচনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভারতের প্যারালিম্পিক বিপ্লব শুধু ক্রীড়াবিশ্বে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, তা নয়। বরং এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে এক বড় সচেতনতা সৃষ্টি করছে। প্যারালিম্পিক অ্যাথলেটদের কষ্ট এবং তাদের চূড়ান্ত পরিশ্রম দেশের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে।