বিরাট কোহলি (Virat Kohli), ভারতীয় ক্রিকেট (India Cricket Team) ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। রবিবার এক অনন্য মাইলফলক (Milestone Match) অর্জন করেছেন। এই মাইলফলকটি ছিল তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩০০তম ম্যাচ। দুবাইতে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (Champions Trophy 2025) ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) বিরুদ্ধে এই বিশেষ ম্যাচে মাঠে নেমে, কোহলি (Virat Kohli) তাঁর অনুরাগীদের কাছে আরও একবার মুগ্ধ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু, ভাগ্যই যেন তাঁর বিরুদ্ধে ছিল।
কোহলির ৩০০তম ম্যাচটি ছিল এক বিশাল ব্যাপার, বিশেষ করে কোহলি প্রেমীদের জন্য। যখন তৃতীয় ওভারে শুভমন গিল আউট হন, তখন গ্যালারিতে ভারতের ক্রিকেট প্রেমীরা তাঁর নাম ধরে স্লোগান তুলতে শুরু করেন। কোহলির এই বিশেষ ম্যাচের জন্য অনুরাগীদের মধ্যে ছিল প্রচুর প্রত্যাশা। তারা আশা করেছিলেন যে কোহলি আবারো তাঁর ব্যাটিং জাদু দেখাবেন এবং ভারতীয় দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু খুব দ্রুতই সেই আশা ধূলিসাৎ হয়ে যায়। সপ্তম ওভারে এসে কোহলি আউট হয়ে যান এবং গ্যালারিতে নেমে আসে স্তব্ধতা।
কোহলি যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন তিনি বেশ কিছু রান সংগ্রহ করেন। তিনি এক চমৎকার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তী বলেই বিপদ আসে। ম্যাট হেনরির বলে একটি শক্তিশালী শট মারতে গিয়ে, কোহলি আউট হয়ে যান। গ্লেন ফিলিপস এক হাতে দারুণভাবে ক্যাচটি ধরেন এবং কোহলির ইনিংসটি শেষ হয়ে যায়। মাত্র ১১ রান করেই কোহলি প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। তাঁর মাইলফলক ম্যাচে এমনভাবে আউট হওয়ার পর, কোহলি নিজেও কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে যান। এর আগে যেকোনো ম্যাচে এমন পরিস্থিতি তাঁর জন্য কখনোই হয়নি।
এই ঘটনা ছিল পুরো স্টেডিয়ামের জন্য এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। গ্লেন ফিলিপসের এই দুর্দান্ত ক্যাচটি যেন সময়কেও থামিয়ে দিয়েছিল। তিনি এক অনন্য দক্ষতায় উড়ে গিয়ে কোহলির শটটি ধরেছিলেন, যা দেখে যে কেউ অবাক হয়ে যেত। এমনকি কোহলি নিজেও চোখের সামনে যা ঘটেছিল, তা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাঁর স্তব্ধতা এবং হতাশা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান ছিল।
SUPERMAN!
What a catch from Glenn Phillips to dismiss Virat Kohli
– He has taken 1 handed Blinders many times#INDvsNZ #glennphillips #ViratKohli pic.twitter.com/A3gWTSJzTZ
— Sachin dilwar (@sachin_dilwar) March 2, 2025
এমন পরিস্থিতিতে কোহলির জন্য তার স্ত্রী তথা বলিউড অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মাও গ্যালারিতে বসে ছিল। তাঁর চোখে দেখা যায় গভীর হতাশা এবং বিষণ্ণতা। কোহলির এই অসফলতা তার সমর্থকদের জন্যও একটি বড় ধাক্কা ছিল। অনেকেই আশায় ছিলেন যে তিনি আবার তার পুরনো ফর্মে ফিরে আসবেন এবং ভারতকে জয় এনে দেবেন। তবে, সে আশাও পূর্ণ হয়নি।
এই ম্যাচে ভারতীয় দলের জন্য আরও একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে। কোহলির আউট হওয়ার পর, ভারতের তৃতীয় উইকেটও পড়ে যায়। তবে, কোহলির এই হতাশাজনক আউটের পর, ভারতীয় দলের জন্য একটুও সহজ ছিল না। কোহলি যখন ২০০তম ম্যাচ খেলেছিলেন, তখনও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে, সেবার কোহলি এক শতরান করেছিলেন। অথচ, এই বিশেষ ম্যাচে তাঁকে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। কোহলি জানতেন যে এই ম্যাচে তাঁর দলের জন্য অনেক কিছুই নির্ভর করছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্ব নিতে পারেননি।
কোহলির ক্যারিয়ারের ৩০০তম ম্যাচ ছিল তার জন্য অনেক বড় এক মাইলফলক। কিন্তু, সেই ম্যাচে এত অল্প সময়ে আউট হয়ে যাওয়ায়, কোহলি এবং তার সমর্থকরা খুবই হতাশ। তবুও, ক্রিকেটের মতো একটি অপ্রতিরোধ্য খেলায় কখনোই কিছু নির্দিষ্ট নয়। কোহলির আরও অনেক বড় মাইলফলক এবং রেকর্ড অপেক্ষা করছে। তাঁর ক্যারিয়ার আরও অনেক উজ্জ্বল মুহূর্তের সাক্ষী হবে এবং এই একটি ম্যাচের হতাশার মধ্য দিয়ে সেই উজ্জ্বলতা কখনোই কমবে না।