
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) টেস্ট ক্রিকেটকে এক নতুন দিশা দিয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভক্তদের আগ্রহ ধরে রাখতে ও এই ফরম্যাটে একটি বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা তৈরি করতে আইসিসি চালু করেছিল এই চ্যাম্পিয়নশিপ। ইতিমধ্যেই এর দুটি সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে এবং দুটি ক্ষেত্রেই ফাইনালে (WTC Final) জায়গা করে নিয়েছিল ভারত (India)। তবে আফসোসের বিষয়—দুটি ফাইনালেই হারতে হয়েছে ভারতকে। প্রথমবার বিরাট কোহলির নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডের কাছে এবং দ্বিতীয়বার রোহিত শর্মার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয় ভারত।
প্রয়াত জেল বন্দি প্রাক্তন পাক বিশ্বকাপ জয়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান?
এই পরপর দুইবার রানার্স হওয়া নিয়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এর অন্যতম কারণ হতে পারে ফাইনালের ভেন্যু নির্বাচন। তিনটি সংস্করণেই ফাইনাল আয়োজন করা হয়েছে ইংল্যান্ডে, যেখানে জুন মাসে আবহাওয়া সবসময়ই ব্যাটারদের পক্ষে থাকে না। ভারতীয় দল, যারা সাধারণত উপমহাদেশের স্পিন-সহায়ক পিচে খেলে অভ্যস্ত, তারা ইংল্যান্ডের সিম-সুইং সহায়ক কন্ডিশনে পড়ে যায় চাপে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) চাইছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল শুধুমাত্র ইংল্যান্ডে না রেখে অন্য দেশেও আয়োজন করা হোক। এতে করে সমস্ত দেশের জন্য একটা ন্যায্য পরিস্থিতি তৈরি হবে। সেই লক্ষ্যেই ভারত চাইছে ২০২৭ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজন করতে। তবে এখানেই দেখা দিচ্ছে এক বড় রাজনৈতিক সমস্যা—পাকিস্তান।
Virat Kohli : অবসরের গুঞ্জনের মাঝেই ‘বিস্ফোরক’ কিং কোহলি
আইসিসির একটি সাম্প্রতিক বৈঠকে, যা জিম্বাবোয়েতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে আলোচনা হয়েছে ফাইনাল আয়োজনের নতুন ভেন্যু নিয়ে। পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত ২০২৭ সালের ফাইনাল আয়োজনে বিড করতে আগ্রহী। যদি ভারত সেই সময় ফাইনালে পৌঁছায়, তাহলে দেশেই ফাইনাল হওয়া নিঃসন্দেহে হবে ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য একটি স্মরণীয় ঘটনা। তবে সমস্যা একটাই—যদি পাকিস্তানও (Pakistan) ফাইনালে ওঠে!
ভারত ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ খেলে না। এমনকি আইসিসি বা এসিসির টুর্নামেন্ট ছাড়া এই দুই দল একে অপরের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগও পায় না। এই পরিস্থিতিতে যদি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো একটি বড় ফাইনালে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের মুখোমুখি হয় এবং তা ভারতে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়, তবে তা হবে অত্যন্ত জটিল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যা।
তৈরী হবে নতুন বাগান! নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ সৃঞ্জয়ের
যদিও অনেকেই মনে করছেন, পাকিস্তানের পারফরম্যান্স বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এমন নয় যে তারা সহজে ফাইনালে উঠতে পারে। তিনটি সংস্করণেই তারা বড় কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু ভবিষ্যতের ক্রিকেটে সবই সম্ভব। তাই এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত থাকা যায় না।
ভারতের ঘরের মাঠে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল আয়োজন হলে তা দেশের ক্রিকেটের জন্য হবে এক বড় গৌরবের বিষয়। তবে সেই পথ এখনো সহজ নয়। রাজনীতি, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক—সবই বড় ভূমিকা নেবে। তাই আইসিসিকে শুধু ক্রিকেটের মানসিকতা নয়, কূটনৈতিক বাস্তবতাকেও মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কিংবদন্তি ক্রিকেটারের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ক্রীড়াজগৎ
সামনে জুনে ইংল্যান্ড সফর দিয়ে ভারত শুরু করবে তাদের নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ যাত্রা। ২০২৫-২৭ চক্রে ভারতের লক্ষ্য থাকবে আবারও ফাইনালে ওঠা, তবে এ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। তার আগে যদি ভারত আয়োজনের বিড পায় এবং সেখানেই ফাইনালে ওঠে, তবে সেটি হবে এক ঐতিহাসিক মিলনবিন্দু।