
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলারদের একজন, মায়াঙ্ক যাদব (Mayank Yadav)। সম্প্রতি তিনি ইনজুরি থেকে সেরে উঠেছেন এবং লখনউ সুপার জায়ান্টসের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। দীর্ঘ সময় ধরে মাঠের বাইরে থাকার পর এই তরুণ পেসারের ফিরে আসা দলের জন্য এক বড় সুখবর। এক জাতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়াঙ্ক তাঁর ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং দলের সঙ্গে যোগ দিতে প্রস্তুত।
গত মরসুমে মাত্র চারটি ম্যাচ খেলা সত্ত্বেও এলএসজি মায়াঙ্ককে ১১ কোটি টাকায় রিটেন করেছিল। তাঁর প্রতিভা এবং সম্ভাবনার উপর ভরসা রেখে দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বেঙ্গালুরুর বিসিসিআই সেন্টার অফ এক্সিলেন্স থেকে মায়াঙ্ককে খেলার জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তবে, সূত্র জানিয়েছে, তাঁর খেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এলএসজি-র কোচিং স্টাফ, যারা তাঁর ফিটনেস এবং পারফরম্যান্স নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
মায়াঙ্ক লাম্বার স্ট্রেস ইনজুরির কারণে সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে তাঁর সুস্থ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পায়ের আঙুলে চোটের কারণে তাঁর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়। এলএসজি-র কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার মরসুমের শুরুতে মায়াঙ্কের ইনজুরি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মায়াঙ্ক ঘটনাচক্রে বিছানায় পা ঠেকিয়ে পায়ের আঙুলে চোট পান, যা তাঁর ইনজুরির তালিকায় যুক্ত হয়।
মায়াঙ্কের ফিরে আসা ঋষভ পন্থদের জন্য এক বড় প্রেরণা। তুলনামূলকভাবে কম সম্পদ নিয়ে খেলা এই দলটি এই মরসুমে ইতিমধ্যেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। সাতটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জয়লাভ করে তারা বর্তমানে লিগ টেবিলে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। মায়াঙ্কের গতি এবং বোলিংয়ের ধার এলএসজি-র বোলিং লাইনআপকে আরও শক্তিশালী করবে। তাঁর ফিরে আসা দলের মনোবল এবং কৌশলগত বৈচিত্র্য বাড়াবে।
মরসুমের শুরুতে মায়াঙ্কের অনুপস্থিতিতে এলএসজি শার্দূল ঠাকুরকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে সই করেছিল। শার্দূল এখনও পর্যন্ত ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। তবে, তিনি বাঁহাতি পেসার মোহসিন খানের বদলি হিসেবে দলে এসেছিলেন। মায়াঙ্কের ফিরে আসার সঙ্গে এলএসজি-র বোলিং ইউনিট এখন আরও ভারসাম্যপূর্ণ এবং শক্তিশালী হবে। তাঁর গতিময় বোলিং প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মায়াঙ্ক যাদবের গতি তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটে একটি বিশেষ স্থান করে দিয়েছে। গত মরসুমে তিনি যে চারটি ম্যাচ খেলেছিলেন, তাতে তাঁর বোলিংয়ের ধার এবং নিয়ন্ত্রণ সকলের নজর কেড়েছিল। তাঁর ইনজুরি তাঁর ক্যারিয়ারে একটি সাময়িক বাধা হলেও, তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ফিরে এসেছেন। এলএসজির সমর্থকরা মায়াঙ্কের ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত। তাঁর উপস্থিতি দলের প্লে-অফে পৌঁছানোর সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করবে।
মায়াঙ্কের ফিরে আসার সঙ্গে এলএসজির কোচিং স্টাফের উপর এখন বড় দায়িত্ব। তাঁর ফিটনেস এবং পারফরম্যান্সের ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁকে ধীরে ধীরে দলে ফিরিয়ে আনা হবে, যাতে তিনি পুরোদমে নিজের সেরা ফর্মে ফিরতে পারেন। মায়াঙ্কের গতি এবং আগ্রাসী বোলিং শৈলী এলএসজিকে ম্যাচের গতিপথ বদল করার ক্ষমতা দেবে।
আইপিএল ২০২৫-এ মায়াঙ্ক যাদবের এই প্রত্যাবর্তন কেবল এলএসজি-র জন্যই নয়, ভারতীয় ক্রিকেটের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তাঁর প্রতিভা এবং সম্ভাবনা ভারতীয় দলের ভবিষ্যতের জন্যও আশার আলো। সমর্থকরা এখন অপেক্ষায় রয়েছেন, মায়াঙ্ক কীভাবে মাঠে ফিরে তাঁর জাদু দেখান। এলএসজি-র এই যাত্রায় মায়াঙ্কের অবদান নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ হবে।