
আইপিএলের (IPL 2025) নতুন মরশুম শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ২২ মার্চ থেকে মাঠে গড়াবে কোটি টাকার এই লিগ। মেগা নিলামের পর প্রতিটি দলই নতুন রূপে সেজেছে। তবে পাঞ্জাব কিংসের (Punjab Kings) দিকে এবার সকলের নজর। বছরের পর বছর ধরে ট্রফির জন্য মরিয়া এই দলটি এবার শ্রেয়স আইয়ারের (Shreyas Iyer) নেতৃত্বে নতুন উদ্যমে মাঠে নামছে। প্রীতি জিন্টার এই দল কি এবার অধরা ট্রফি ঘরে তুলতে পারবে? এই প্রশ্নই ঘুরছে সকলের মনে।
মেগা নিলামের পর পাঞ্জাব কিংস দলটিকে একেবারে ঢেলে সাজিয়েছে। শ্রেয়স আইয়ারকে ২৬.৭৫ কোটি টাকায় কিনে অধিনায়ক করা হয়েছে। তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম এবং নেতৃত্বের দক্ষতা দলের জন্য বড় শক্তি। গত মরসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পিছনে শ্রেয়সের অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি শেষ হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও তিনি ভারতের হয়ে সর্বাধিক রান করেছেন। তাই পাঞ্জাবের সমর্থকরা আশা করছেন, শ্রেয়সের নেতৃত্বে এবার তাঁদের ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে।
পাঞ্জাবের স্কোয়াডে রয়েছে একাধিক তারকা। ব্যাটিং লাইনআপে রয়েছেন নেহাল ওয়াধেরা, বিষ্ণু বিনোদ, জস ইংলিস, হর্নুর পান্নু, প্রভসিমরন সিং, শশাঙ্ক সিং, মার্কাস স্টয়নিস এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো নাম। অলরাউন্ডার হিসেবে হরপ্রীত ব্রার, মার্কো জানসেন, আজমাতুল্লা ওমরজাই, অ্যারন হার্ডি এবং মুশির খান দলকে ভারসাম্য দেবেন। বোলিং বিভাগে অর্শদীপ সিং, যুজবেন্দ্র চাহাল, লকি ফার্গুসন, কুলদীপ সেন, জেভিয়ার বার্টলেট এবং যশ ঠাকুরের মতো পেসাররা রয়েছেন। এই দলের শক্তি নিঃসন্দেহে তাদের বোলিং আক্রমণ। অর্শদীপ, লকি এবং মার্কোর পেস অ্যাটাক বিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপে ভয় ধরাতে পারে। তাছাড়া যশ ঠাকুর এবং কুলদীপ সেনের মতো তরুণ ভারতীয় পেসাররাও ফর্মে থাকলে দলের জন্য বড় সম্পদ হতে পারেন। আজমাতুল্লা ওমরজাই ব্যাট এবং বলে অবদান রাখতে পারেন, যা পাঞ্জাবের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা।
তবে দলের দুর্বলতাও কম নয়। স্পিন বিভাগে যুজবেন্দ্র চাহাল ছাড়া তেমন অভিজ্ঞ কেউ নেই। হরপ্রীত ব্রার এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল স্পিন করতে পারলেও তাঁরা প্রথম সারির স্পিনার নন। চাহাল নিজেও বেশ কিছুদিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন। তাই তাঁর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। ব্যাটিং লাইনআপ মোটামুটি শক্তিশালী হলেও বিকল্প খুব বেশি নেই। দলের বেশিরভাগ শক্তি বিদেশি খেলোয়াড়দের উপর নির্ভর করছে। কিন্তু প্রতি ম্যাচে মাত্র চারজন বিদেশি খেলানোর নিয়মের কারণে প্রথম একাদশ সাজানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে পাঞ্জাব। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে শ্রেয়স এবং চাহাল ছাড়া সেভাবে বড় নাম নেই। তরুণ খেলোয়াড়রা যদি চাপের মুখে ধরাশায়ী হয়, তবে দলের পক্ষে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা কঠিন হবে।
পাঞ্জাব কিংস এবার নতুন কোচ রিকি পন্টিংয়ের অধীনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। পন্টিংয়ের অভিজ্ঞতা এবং কৌশল দলের জন্য বড় সুবিধা হতে পারে। শ্রেয়সের সঙ্গে পন্টিংয়ের সমন্বয় যদি ভালোভাবে কাজ করে, তবে পাঞ্জাব এবার প্লে-অফে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখতেই পারে। তবে ট্রফি জয়ের পথে তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক। দলের ভারসাম্য, খেলোয়াড়দের ফর্ম এবং কৌশলগত সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে এবার তাদের ভাগ্য। পাঞ্জাবের সমর্থকরা এখন অপেক্ষায় আছেন, শ্রেয়সের নেতৃত্বে তাঁদের দল কতদূর যেতে পারে। প্রথম ম্যাচ থেকেই দলের পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে সকলের নজরে থাকবে।